একজন মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষ করে তুলতে শিক্ষার বিকল্প নেই। মানুষের শিক্ষার শুরু হয় জন্মের পর থেকেই তথা পরিবার থেকেই। শিশুর ক্ষুধা লাগলে যে কেঁদে তার মাকে জানাতে হবে, এটা সে শিখে যায়। এরপর চলতে থাকে একের পর এক শিক্ষা। তবে পরিবারের পরই আমাদের শিক্ষার হাতেখড়ি হয় শিক্ষকের কাছে। একজন শিক্ষক আমাদের শুধু পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষাই দেন না, পরিপূর্ণ মানুষ হতে শেখান।
শিক্ষা যদি জাতির মেরুদণ্ড হয় তাহলে শিক্ষকরা সে মেরুদণ্ডের নির্মাতা। নৈতিক বিচারে শিক্ষকতার চেয়ে সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ পেশা আর নেই। শিক্ষকরা এ সমাজের প্রাণ। পৃথিবীতে যে যত মহৎ হোক না কেন, সে কোনো না কোনো শিক্ষকের অধীনে জ্ঞান অর্জন করেছে। ব্যক্তিগতভাবে অনেকে কোনো না কোনো শিক্ষকের কাছে ঋণী এবং বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তাদের সে অভিব্যক্তিও ফুটে ওঠে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও শিক্ষকতা একটি মহান পেশা হিসেবে স্বীকৃত। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মানসম্মত শিক্ষা। বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলে পাসের আধিক্য বাড়লেও গুণগত মান নিয়ে শিক্ষাবিদদের যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। তাই মানসম্মত শিক্ষাদানের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষক দ্বারা সব শিক্ষার্থীর শিক্ষাদান নিশ্চিত করতে হবে।
মানসম্মত শিক্ষার মূল উপাদান : ১. মানসম্মত শিক্ষক, ২. মানসম্মত শিক্ষা উপকরণ ও ৩. মানসম্মত পরিবেশ। আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম, পর্যাপ্তসংখ্যক যোগ্য শিক্ষক, প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষাদান সামগ্রী, ভৌত অবকাঠামো, যথার্থ শিক্ষণ-শিখন পদ্ধতি, কার্যকর ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান এবং গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ ও উপযুক্ত মূল্যায়ন ছাড়া মানসম্মত শিক্ষা অর্জন পুরোপুরি সম্ভব নয়। তাই শিক্ষকদের পেশাগত স্বীকৃতি, সম্মানজনক বেতন, পেনশন, সামাজিক প্রাপ্তি ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষক সংকট থাকলে তা দূর করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত অনুযায়ী তা নির্ধারণ করতে হবে।