বরফ যুগের পরে বৈশ্বিক উষ্ণতা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিসহ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মাছ প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। উন্নয়নশীল দেশের প্রায় ৫০০ মিলিয়ন জনগণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের জীবিকার জন্য মৎস্য ও কৃষির উপর নির্ভরশীল । Bangladesh Fisheries Development Corporation এর তথ্য মতে, গত দুই দশকে বাংলাদেশের বঙ্গপসাগরের এক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোনের (EEZ) মৎস্য সম্পদের পরিমাণ ২৫-৩০% হ্রাস পেয়েছে। FAO এর ২০০৯ সালের তথ্য মতে, বঙ্গপসাগরে গত দুই দশকে ১০০ প্রজাতির মৎস্য প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে- ৪৪.৪৪% মৎস্য খামার। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান ওয়াচ এর ২০১০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত গ্লোবাল ক্লাইমেট রিঙ্ক ইনডেক্স অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ টি দেশের মধ্যে প্রথমেই অবস্থান করছে বাংলাদেশ। অভ্যন্তরীণ মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ স্থান অধিকারী দেশ। বাংলাদেশ বছরে ৩,০০০ কোটি টাকার মাছ রপ্তানি করে। এদেশের জাতীয় আয়ের ৩.৭% এবং রপ্তানি আয়ের ৪.০৪% মৎস্য খাত হতে আসে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনে মৎস্য খাতের উপর বড় রকমের প্রভাব পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২৯-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার জন্য পানির তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। এতে প্রজননক্ষম মাছ অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং প্রজননে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশ প্রাপ্ত ২৬০ প্রজাতির মাছের মধ্যে ১৩০ প্রজাতির মাছই পাওয়া যায় হাওড়াঞ্চলে কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাত কমে যাচ্ছে এবং একই সাথে কমে যাচ্ছে হাওড়াঞ্চলের পানির পরিমাণ।