বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগ ১২০১ থেকে ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত। ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে প্রথম
মুসলমান শসলের সুত্রপাত এবং ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের বিজয়ে তার অবসান। তাই
বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের সবটুকুই মুসলিম শাসনামলের অন্তর্গত ।
ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনামলে যুগবিভাগ
তুর্কি যুগ ( ১২০১-১৩৫০ খ্রি)
বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের শুরুতেই ১২০১ থেকে ১৩৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে তথাকথিত “অন্ধকার যুগ, বলে একটি বিতর্কিত বিষয়ের অবতারণা হয়েছে । তুর্কি শাসকদের সময়কে বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগ বলা হয় । তুর্কি যুগকে প্রধানত ভাষা গঠনের যুগ ছিল বলে মনে করা হয় । অন্ধকার যুগের সাহিত্য সৃষ্টির কোন নিদর্শন পাওয়া যায়নি এ কথাও সত্য নয় । এ সময়ে সাহিত্যের ব্যাপক নিদর্শনা পাওয়া না গেলেও অন্যান্য ভাষায় সাহিত্যের সৃষ্টির নিদর্শন বর্তমানে থাকাতে অন্ধকার যুগের অপবাদের অসারতা প্রমাণিত হয় । অন্য ভাষায় রচিত এ সময়ের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ শূন্যপুরাণঃ রামাই প্নডিত রচনা ধর্মপূজার শস্ত্রগ্রন্থ। “ শূন্যপুরাণ গদ্য-পদ্য মিশ্রিত চম্পূকাব্য । “নিরঞ্জনের রুষ্মা ‘ শূনয়পুরাণ কাব্যের বিশেষ।
সেক শুভোদয়াঃ রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি হলায়ূধ মিশ্র রচিত “ সেক শুভোদয়া” সংস্কৃত গদ্যপদ্যে লেখ চম্পূকাব্য ।
সুলতানি যুগ (১৩৫১-১৫৭৫ খ্রি)
পাঠান সুলতাঙ্গন মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতায় অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন । এই সময়ে গৌড়ীয় শাহী দরবার বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সাংস্কৃতিক স্নায়ুকেন্দ্র রুপে গড়ে ওঠে । গৌড়কে কেন্দ্র করে এই সময়ে বাংলা সাহিত্যের বিকাশের গুরুত্ব বিবেচনা করে ড’ দীনেশ্চন্দ্র সেন এই আমল কে “গৌড়ীয় যুগ” ও বলে অভিহিত করেন । এসময় রুকনুদ্দীন বারবক শাহ এর পৃষ্ঠপোষকতায় জৈনুদ্দীন ‘রসূলবিজয়কাব্য এবং আলাউদ্দীন হোসেন শাহের পৃষ্ঠপোষকতায় বিপ্রদাস পিপিলাই “মন্সাবিজয়” কাব্য রচনা করেন ।
মোগল যুগ (১৫৭৬-১৭৫৭ খ্রি)
আরাকান রাজাসভার পৃষ্ঠপোষকতায় মুসল্মান কবিগণ প্রণয়কাব্য রচনা করে বাংলা সাহিত্যে স্বতন্ত্র্য ধারার প্রবর্তন করেন ।