ভাস্কর্য (ইংরেজি: Sculpture) ত্রি-মাত্রিক শিল্পকর্মকে ভাস্কর্য বলে।অর্থাৎ, জ্যামিতিশাস্ত্রের ঘণকের ন্যায় ভাস্কর্যকে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতা সহ ত্রি-মাত্রিকহতে হবে। ভারত, বাংলাদেশ এবং চীনের ন্যায় বিশ্বের সর্বত্র বিভিন্ন ধরনের, বহুমূখী আকৃতির ভাস্কর্য দেখতে পাওয়া যায়। রেনেসাঁ এবং আধুনিককালে এটি ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। পুতুল, মুখোশ, মাটিরজিনিসপত্র ভাস্কর্যের উদাহরণ।
টেরাকোটা
টেরাকোটা একটি লাতিন শব্দ: 'টেরা' অর্থ মাটি, আর 'কোটা' অর্থ পোড়ানো । মানুষের ব্যবহার্য পোড়ামাটির তৈরি সকল রকমের দ্রব্য টেরাকোটা নামে পরিচিত। আঠালো মাটির সঙ্গে খড়কুটো, তুষপ্রভৃতি মিশিয়ে কাদামাটি প্রস্তুত করা হয়। সেই মাটি থেকে মূর্তি, দৃশ্যাবলি তৈরি করে রোদে শুকিয়ে আগুনে পুড়িয়ে টেরাকোটা ভাস্কর্য তৈরি করা হয়। মানবসভ্যতার বিকাশকাল হতে পোড়ামাটির ভাস্কর্যের ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যাবীলনীয় সভ্যতা, মায়া সভ্যতায় এই শিল্পের প্রচলন ছিল।পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে মৌর্য সাম্রাজ্য, গুপ্ত সাম্রাজ্য-এর বহু টেরাকোটার নিদর্শন পাওয়া গেছে।পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহর টেরাকোটা শিল্পের জন্য বিখ্যাত।
পটচিত্র
পট শব্দের প্রকৃত অর্থ হল কাপড়। শব্দটি সংস্কৃত "পট্ট" থেকে এসেছে। বর্তমানে এই শব্দটিকে ছবি, ছবি আঁকার মোটা কাপড় বা কাগজের খন্ড ইত্যাদি অর্থেও ব্যবহার করা হয়। পটের উপর তুলির সাহায্যে রং লাগিয়ে বস্তুর রূপ ফুটিয়ে তোলাই পট চিত্রের মূলকথা ।এতে কাহিনী ধারাবাহিক ভাবে চিত্রিত হতে থাকে । অন্তত আড়াই হাজার বছর ধরে পটচিত্র এ উপমহাদেশের শিল্প জনজীবনের আনন্দের উৎস, শিক্ষার উপকরণ এবং ধর্মীয় আচরণের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে ।বাংলাদেশের পটচিত্রের মধ্যে গাজীর পট ও পশ্চিমবঙ্গের পটচিত্রের মধ্যে কালীঘাটের পট উল্লেখযোগ্য । পট মূলত দুই ধরনের রয়েছে। যথা:
জড়ানো পট: এ ধরনের পট ১৫-৩০ ফুট লম্বা এবং ২-৩ ফুট চওড়া হয়।
চৌকা পট: এগুলোর আকার ছোট হয়।
কাপড়ের উপর গোবর ও আঠার প্রলেপ দিয়ে প্রথমে একটি জমিন তৈরি করা হয়। সেই জমিনের উপর তুলি দিয়ে বিভিন্ন চিত্র অঙ্কিত হয়।
স্কেচ
পেন্সিলে আকা চিত্র
ভাষা স্মৃতি সৌধ ভাষ্কর্য
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
শহীদ মিনার বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের গৌরবোজ্জল ধারক স্মৃতিসৌধ। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পাশেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার (Central Shaheed Minar)অবস্থিত। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” দাবীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মীদের একটি মিছিল ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এলাকায় প্রবেশ করে, তখন তাদের উপর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করা হয়। সে সময় গুলিতে সালাম, জব্বার, রফিক সহ নাম না জানা অনেকেই শহীদ হন। তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ২৩ ফেব্রুয়ারি মেডিকেল কলেজের ছাত্র হোস্টেলের ১২ নম্বর শেডের পূর্ব প্রান্তে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়।
তৎকালীন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা বিকেল থেকে রাতের মধ্যে শহীদ মিনার নির্মাণ করে। শহীদ বীরের স্মৃতিতে – শিরোনামে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় শহীদ মিনারের খবর ছাপা হয়। প্রথম শহীদ মিনারটি উচ্চতায় ছিল ১০ ফুট এবং চওড়া ছিল ৬ ফুট। শহীদ মিনার তৈরিতে জিএস শরফুদ্দিন, বদরুল আলম, সাঈদ হায়দারের সাথে দুই জন রাজমিস্ত্রি যুক্ত ছিলেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি তদানীন্তন সরকারের নির্দেশে শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। এরপর ১৯৫৭ সালে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি প্রদানের পর বর্তমান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মান কাজ শুরু হয়ে ১৯৬৩ সালে শেষ হয়।