১৯৪৭ সালের ১৫ আগষ্ট ভারত ব্রিটিশের নিকট হতে স্বাধীনতা লাভ করে। তাই এই দিনটিকে ‘ভারতের স্বাধীনতা দিবস’ বলা হয়। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে ভারতের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি এই সংবিধান কার্যকরের মধ্য দিয়ে ভারত প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। ভারতীয়রা প্রতিবছর ২৬ জানুয়ারি তারিখটি ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ হিসেবে উদযাপন করে।
রাষ্ট্রপতি
রাজেন্দ্র প্রাসাদ (মেয়াদ: ১৯৫০ – ১৯৬২ খ্রি.): স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রথম রাষ্ট্রপতি, জাতীয় কংগ্রেস নেতা ও একজন আইনজীবি।
এ পি জে আব্দুল কালাম (মেয়াদ: ২০০২ – ২০০৭ খ্রি.): ছিলেন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একাদশ রাষ্ট্রপতি। কালাম তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন বিজ্ঞানী হিসেবে। পরে তিনি ঘটনাচক্রে রাজনীতিবিদে পরিণত হন। ভারতের ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র ও মহাকাশযানবাহী রকেট উন্নয়েনর কাজে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ‘ভারতের ক্ষেপনাস্ত্র মানব’ (Missile Man of India) বলা হয়। প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিজ্ঞান গবেষণার আধুনিকায়নে অনবদ্য অবদানের জন্য ১৯৯৭ সালে তিনি ভারতের সর্ব্বোচ্চ বেসামরিক সন্মান ‘ভারতরত্ন’ খেতাব পেয়েছিলেন। তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ `Wings of Fire’।
প্রতিভা পাতিল (মেয়াদ- ২০০৭ – ১২ খ্রি.): ভারতের প্রথম নির্বাচিত মহিলা রাষ্ট্রপতি। তিনি স্বাধীনতার পর ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের দ্বাদশ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
প্রণব মুখোপাধ্যায় (মেয়াদ- ২০১২ – ২০১৭ খ্রি.): ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি ভারতের একমাত্র বাঙালি রাষ্ট্রপতি।
প্রধানমন্ত্রী
পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু (মেয়াদ- ১৯৪৭ – ১৯৬৪ খ্রি.): ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতিবিদ, ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা এবং স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। দুরদৃষ্টিসম্পন্ন পন্ডিত নেহেরু বিশ্বাস করতেন, “দেশ ভাল হয় যদি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভাল হয়”। লেখক হিসেবেও নেহেরু ছিলেন বিশিষ্ট। ইংরেজিতে লেখা তাঁর তিনটি বিখ্যাত বই An Autobiography, Glimpses of World History, The Discovery of India চিরায়ত সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করেছে। তাঁর মেয়ে ইন্দিরা গান্ধী দৌহিত্র রাজীর গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
লাল বাহাদুর শাস্ত্রী (মেয়াদ- ১৯৬৪ – ১৯৬৬ খ্রি.): ছিলেন ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন অন্যতম নেতা। তাঁকে ‘শান্তির মানুষ’ বলা হয়।
ইন্দিরা গান্ধী (মেয়াদ- ১৯৬৬ – ১৯৭৭ খ্রি. এবং ১৯৮০ – ১৯৮৪): ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের তৃতীয় এবং ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর তিনি দেহরক্ষী সাতওয়ান্ত সিং এবং বিআন্ট সিং এর গুলিতে নিহত হন। হত্যাকান্ডের পরেই অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিশেষ কমান্ডো বাহিনী National Security Guard (`ব্ল্যাক ক্যাট’ নামেও পরিচিত) গঠন করা হয়।
রাজিব গান্ধী (মেয়াদ- ১৯৮৪ – ১৯৮৯ খ্রি.): ছিলেন ভারতের সপ্তম প্রধানমন্ত্রী। ভারতের জন্য অস্ত্র ক্রয়ে সুইডেনের অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোফর্স হতে ঘুষ নিয়েছিলেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে – যা Bofors Scandal (বোফর্স কেলেঙ্কারী) নামে পরিচিত। তিনি শ্রীলঙ্কায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ভারতীয় সৈন্য প্রেরণ করেন। ১৯৯১ সালের ২১ মে এল.টি.টি.আই এর আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন। রাজীব গান্ধীকে হত্যার জন্য বোমা বহনকারী আত্মঘাতী মহিলার নাম থানু বা গায়েত্রী। রাজীবগান্ধীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত আসামীর নাম নলিনী। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর কংগ্রেস সভাপতি নিযুক্ত হন নরসীমা রাও।
ড. মনমোহন সিং (মেয়াদ- ২০০৪ – ২০১৪ খ্রি.): ছিলেন ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভারতের প্রথম শিখ প্রধানমন্ত্রী। তিনি পেশায় একজন অর্থনীতিবিদ। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘India’s Export Trends and the Prospects for Self-Sustained Growth’। তাঁকে ‘Economic Reforms in India’এর স্থপতি বলা হয়।
প্রশাসনিক ভাগ
রাজ্য ২৯টি। যথা- মহারাষ্ট্র, জম্বু ও কাশ্মীর, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, --- ছত্তীসগড় (২৬তম), উত্তরাখন্ড (২৭তম), ঝাড়খন্ড (২৮তম) এবং তেলাঙ্গনা (২৯তম) ২০১৪ সালের ২ জুন অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য ভেঙ্গে নবীনতম রাজ্য ‘তেলাঙ্গনা’ আত্মপ্রকাশ করে।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল: ৭টি যথা-আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, চন্ডীগড়, দাদরা ও নাগার হাভেলি, লাক্ষাদ্বীপ, দামান ও দিউ, রাজধানী নয়াদিল্লী এবং পন্ডিচেরী।
মহারাষ্ট্র: মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাই (গ্রীষ্মকালীন), নাগপুর (শীতকালীন)। ২০০৮ সালের ২৬-২৯ নভেম্বর পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা মুম্বাইয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা চালায়।
সিকিম: ১৯৭৫ সালে সিকিম ভারতের অঙ্গীভূত হয়।
পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal): পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। জ্যোতি বসু পশ্চিম রঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
সেভেন সিস্টারস (7 Sisters): ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের ৭ টি রাজ্যকে সেভেন সিস্টারর্স বলা হয়। চিকেন নেক (উংরেজিতে -Chicken’s neck;অন্য নাম সিলিগুড়ি করিডোর) এর মাধ্যমে সেভেন সিস্টারর্স ভারতের মূল ভূখন্ডের সাথে যুক্ত। করিডোরের দৈর্ঘ্য ২১-৪০ কিমি এর মধ্যে। বাংলাদেশ ও নেপালকে পৃথককারী করিডোরটি পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত।
7 Sisters
রাজধানী
অরুণাচল
ইটানগর
মিজোরাম
আইজল
ত্রিপুরা
আগরতলা {ত্রিপুরা গেরিলা সংগঠন NLFT (National Liberation Front of Tripura)}
নাগাল্যান্ড
কোহিমা
মেঘালয়
শিলং
আসাম
দিসপুর {আসামের গেরিলা সংগঠন উলফা ULFA (United Liberation Front os Assam)। উলফার প্রধান পরেশ বডুয়া।
মনিপুর
ইম্ফাল
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ: ১৯৫৬৫ সালে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই অঞ্চলের পূর্বে আন্দামান সাগর ও পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। পোর্ট ব্লেয়ার এ অঞ্চলের রাজধানী।