৫০০০-৩২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়ের মিশরকে প্রাক-রাজবংশীয় যুগ বলা হয়। এ সময় মিশর কতগুলো ছোট ছোট নগর রাষ্ট্রে বিভক্ত ছিল। এগুলোকে বলা হত নোম। ৩২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মেনেস নামের এক রাজা সমগ্র মিশরকে একত্রিত করে একটি নগর রাষ্ট্র গড়ে তোলেন। দক্ষিণ মিশরের মেম্ফিস হয় এর রাজধানী। এভাবে মিশরে রাজবংশের সূচনা হয়।
ধর্ম
ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ বহুদেবতার পরিবর্তে একমাত্র সূর্যদেবতার আরাধনার কথা প্রচার করেন। সূর্যদেবতার নাম দেওয়া হয় এটন। দেবতার নামের সাথে মিল রেখে তিনি নিজের নাম রাখেন ইখনাটন। এভাবে সভ্যতার ইতহাসে সর্বপ্রথম ঈশ্বরের ধারণা দেন।
স্থাপত্য ও ভাস্কর্য
প্রাচীন মিষরের রাজাদের বলা হত ‘ফারাও’ (Pharaoh) । মিশরীয়রা মৃত্যুর পর আরেকটি জীবনের অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাসী ছিল। সে জীবনেও রাজা হবেন ফারাও। ফারাও রাজাদের মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য তৈরি করা হয় পিরামিড। পৃথিবীর সবচেয়ে কীর্তিস্তম্ভ পিরামিড। মিশরের সবচেয়ে বড় পিরামিড হচ্ছে ফারাও খুপুর পিরামিড। খুপুর পিরামিড গড়ে উঠেছিল তের একর জায়গা জুড়ে। এর উচ্চতা ছিল প্রায় সাড়ে চারশত ফুট। মিশরীয় ভাস্কর্যের সবচেয়ে বড় গৌরব ‘স্ফিংস’ তৈরিতে। বহুখন্ড পাথরের গায়ে ফুটিয়ে তোলা হতো এ ভাস্কর্য। স্ফিংসের দেহ সিংহের আকৃতির, আর মাথা ছিল ফারাওয়ের। ফারাওদের আভিজাত্য শক্তির প্রতীক ছিল এ মূর্তি। ফারাও তুতেনখামেন খ্রিস্টপূর্ব ১৩৩৩ – ১৩২৪ অব্দে মিশরে রাজত্ব করেন। ১৯২২ সালে হাওয়ার্ড কার্টার তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কার করে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তোলেন।
লিখন পদ্ধতির উদ্ভাবন
মিশরীয়রা একটি লিখন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে। প্রথম দিকে ছবি এঁকে এঁকে মিশরীয়রা মনের ভার প্রকাশ করতো। এক একটি ছবি ছিল এতে একটি অক্ষরের প্রতীক। অক্ষরভিত্তিক মিশরীয় এ চিত্রলিপিকে বলা হয় ‘হায়ারোগ্লিফিক’ (Hieroglyphics) । গ্রিক শব্দ ‘হায়ারোগ্লিফিক’ অর্থ পবিত্র লিপি। ‘প্যাপিরাস’ নামক এক ধরনের নল গাছের বাকল দিয়ে তারা সাদা রঙের কাগজও তৈরি করত। চিত্রশিল্পীরা চিত্রে শৈল্পিক সৌন্দর্য ফুটে তোলার জন্য দ্বিমাত্রিক পৃষ্টতল ব্যবহার করত।
বিজ্ঞান
মিশরীয়রা সর্বপ্রথম ১২ মাসে ১ বছর, ৩০ দিনে ১ মাস এই গণনারীতি চালু করেন। যেহেতু ফারাও মৃত্যুর পর পরকালে রাজা হবেন সেহেতু তাঁর মৃতদেহকে পচন থেকে রক্ষার জন্য মিশরীয়র বিজ্ঞানীরা মমি তৈরি করতে শেখেন।