১৯৭৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান১৯৭৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সাধারণ অধিবেশনে বাংলা ভাষায় একটি ভাষণ দিয়েছিলেন।
১৯৭৫ সালে, বাংলাদেশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিল। ১৯৭৬থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এটি জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের (ইসোসোক) নির্বাচিত সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করে। ১৯৭৯ সালে, বাংলাদেশ জাতিসংঘের সুরক্ষা কাউন্সিলেনির্বাচিত হয়েছিল। সুরক্ষা কাউন্সিলের সদস্য হিসাবে বাংলাদেশ আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল, ইজরায়েল জনবসতির সমালোচনা করেছিল এবং ইরান থেকে আমেরিকান জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশগুলির সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছিল। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ইসকোসকে আরও এক মেয়াদ দায়িত্ব পালন করে। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৩ সাল অবধি বাংলাদেশ গ্রুপ অব ৭৭ এর চেয়ারম্যান ছিল। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের হাই কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিল। ১৯৮৫ সালে, বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান করা হয়।
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী১৯৮৬ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৪১ তম অধিবেশনে সাধারণ পরিষদের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন। বাংলাদেশ ২০০০ সালে আবারও সুরক্ষা কাউন্সিলে নির্বাচিত হয়েছিল এবং ২০০০ সালের মার্চ থেকে ২০০১ সালের জুন পর্যন্ত সুরক্ষা কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিল। সুরক্ষা কাউন্সিলের মেয়াদকালে সিয়েরা লিওন সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি ছিল বাংলাদেশ। একই সময়ে বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞার ভূমিকা সম্পর্কিত কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যানও ছিলেন। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে দায়িত্ব পালন করেছে। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং কমিশনে যোগ দেয়।
বাংলাদেশ ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবরে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের নির্বাচিত হয়েছিল। এতে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল। কাউন্সিলের নির্বাচনে বাংলাদেশ ১৭৮ টি ভোট পেয়েছিল। বাংলাদেশ এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের তিনটি মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছিল
বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রীয় অতিথি
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যিনি সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করে তিনি হলেন ইন্দিরা গান্ধি। স্বাধীনতার পর ইন্দিরা গান্ধি প্রথম রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসাবে বাংলাদেশে আগমন করেন। তারিখটা ১৭ মার্চ ১৯৭২। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের এই দিনে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধি। তার আগে কোনো বিদেশী রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান বাংলাদেশে আসেন নি।
ভারতীয় মিত্রবাহিনীর ফেরত যাওয়া
বঙ্গবন্ধু ভারতীয় মিত্রবাহিনীল উপস্থিত নিয়ে দেশি বিদেশি অপপ্রচারের সুযোগ না দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির সরকারকে মিত্রবাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন। মিত্রবাহিনী ১৯৭২ সালের ১২ মার্চ বাংলাদেশ ত্যাগ করে।
ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি
বাংলাদেশ প্রথম মৈত্রী চুক্তি সাক্ষর করে ভারতে আসে। ১৯ মার্চ ১৯৭২ ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি সাক্ষরিত হয়। এও চুক্তির মেয়াদ ছিল ৫ বছর। ১৮ মার্চ ১৯৯৭ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। এই চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভারতের পক্ষে ইন্দিরা গান্ধী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।