শীতপ্রধান দেশে তীব্র শীতে গাছপালা টিকে থাকতে পারে না। সেখিানে কাচের বা প্লাস্টিকের ঘর বানিয়ে সবুজ শাকসবজি চাষ করা হয়। কাচের তৈরি এরকম ঘরকে গ্রিন হাউজ বা সবুজ ঘর বলে। ইহা সূর্যের আলো আসতে বাধা দেয় না কিন্তু বিকীর্ণ তাপ ঢেরত যেতে বাধা দেয়। কাচের ঘরের ভিতরে এভাবে তাপ থেকে যাওয়ার বিষয়টিকে গ্রিন হাউজ প্রভাব বলে। ১৮৯৬ সালে সুইডিশ রসায়নবিদ সোভনটে আরহেনিয়াস ‘গ্রিন হাউজ ইফেক্ট’ কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন। পৃথিবীটাকে একটি গ্রিন হাউজের মতো ধরা যায়। পৃখিবীর চারদিক ঘিরে আছে বায়ুমন্ডল। এ বায়ুমন্ডলে আছে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন, জলীয় বাষ্পসহ অন্যান্য গ্যাস। এসব গ্যাস গ্রিন হাউজের কাচের বা প্লাস্টিকের মতো কাজ করে। এরা সূর্যের তাপ পৃথিবীতে আসতে কোন বাধা দেয় না। ফলে সূর্যের তাপে পৃথিবী উত্তপ্ত হয়। কিন্তু এ গ্যাসগুলো উত্তপ্ত পৃথিবী থেকে তাপকে চলে যেতে বাধা দেয়। ফলে পৃথিবী রাতের বেলায়ও গরম থাকতে পারে। এসব গ্যাসকে গ্রিন হাউজ গ্যাস বলে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন আর জলীয় বাষ্প বায়ুমন্ডলে থাকা মানব সভ্যতার জন্য আশীর্বাদ। কারণ এসব গ্যাস না থাকলে পৃথিবী থেকে তাপ মহাশূন্যে চলে যেত। আর পৃথিবী রাতের বেলায় ভীষণ ঠান্ডা হয়ে পড়ত। এখন প্রশ্ন হলো, আশীর্বাদ আবার কীভাবে সমস্যা হলো? সমস্যা হলো বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেশি থাকায় এরা বেশি বেশি তাপ ধরে রাখতে পারছে। তাই পৃথিবীর তাপমাত্রা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা এভাবে বেড়ে যাওয়াকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, পেট্রোল, ডিজেল, প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি) পোড়ানোর ফলে পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে বন উজাড় করে ফেলার কারণে গাঝ কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করছে কম। ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।