ওজোন অক্সিজেনের একটি রূপভেদ। এর সংকেত O3। ওজোনের রঙ গাঢ় নীল এবং গন্ধ মাছের আঁশটের মত। বায়ুমন্ডলের স্ট্র্যাটোমন্ডলে ওজোনের একটি স্তর অবস্থিত। সূর্য রশ্মিতে ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থাকে। অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে চর্ম ক্যান্সার, চোখে ছানিসহ নানাবিধ রোগ হতে পারে। বায়ুমন্ডলের ওজোনস্তর সূর্যের আলোর ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মির (Ultraviolet rays) বেশির ভাগই শুষে নেয়। ফলে মানুষসহ জীবজন্তু অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকারক দিক হতে রক্ষা পায়।
ওজোনস্তর অবক্ষয় (Deplation of ozone layer) দুটি স্বাতন্ত্র কিন্তু সম্পর্কযুক্ত ঘটনা যা ১০৭০ এর দশক থেকে পরিলক্ষিত হচ্ছে। পৃথিবীর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোনস্তর আয়তনে প্রতি দশকে ৪% হ্রাস পাচ্ছে এবং এর বেশির ভাগই ঘটছে পৃথিবীর মেরু অঞ্চলে। এই সাম্প্রতিক ঘটনাটি ওজোনস্তর ছিদ্র (ozone hole) বলা হয়ে থাকে। এই ঘটনাটি ওজোনস্তরের ওজোন অণুর হ্যালোজেন (ক্লোরিন, ফ্লোরিন প্রভৃতি) দ্বারা ফভাবকীয় ক্ষয়ের ফলে হয়ে থাকে। এ ই হ্যালোজেন অণুর মূল উৎস মানবসৃষ্ট হ্যালোকার্বন বা ফ্রেয়ন। ফ্রেয়নের রাসয়নিক নাম ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন (CFC)। ১৯২০ সালে Prof. Thomas Midgley ক্লোরো-ফ্লোরো কার্বন আবিষ্কার করেন। রেফ্রিজারেটরের কম্প্রেসার, এয়ারকন্ডিশনার প্রভৃতিতে শীতলকারক হিসেবে ফেয়ন ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এরোসোল, ইনহেলার প্রভৃতিতেও ফ্রেয়ন ব্যবহৃত হয়। ভূ-পৃষ্ট থেকে নির্গমনের পর ক্লোরোফ্লোরো ফুটো সৃষ্টি করেছে। ওজোনস্তরে সবচেয়েবেশি ক্ষতি করে ক্লোরিন গ্যাস।
CFCl3 → CFCl2 + Cl
Cl + O3 → ClO + O2
ClO + O3 → Cl + 2 O2
বর্তমানে রেফ্রিজারের কম্প্রেসারে হিমায়ক হিসেবে ফ্রেয়নের পবির্তে পরিবেশবান্ধব গ্যাস R-134A (রাসায়নিক নাম টেট্রাফ্লুরো ইথেন), R-600A (রাসায়নিক নাম আইসোবিউটেন) এর ব্যবহার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।